নিউজ ডেক্সঃ
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী জরিপ করা হলে অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের কাছাকাছি কোন দেশ নেই। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্র চলছে। খাদ্যের অভাবে কখনো দুর্ভিক্ষ হয় না। দেশ পরাধীন হলে অথবা একনায়কতন্ত্র চললে সেদেশে দুর্ভিক্ষ হবেই। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে বৈষম্য সৃষ্টি হয়। বৈষম্য থেকেই দেখা দেয় দূর্ভিক্ষ। জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃতি দিয় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের ৪৫টি দেশে খাদ্য সংকট হবে। এর মধ্যে এশিয়ার নয়টি আর দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে।
আজ রবিবার (২৩অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে উপজেলা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে জ্বালানি তেল কিনতে পারছে না দেশ। একারণে, বিদ্যুতের অভাবে কৃষকরা সেচ দিতে পারবে না। আবার বিশ^ব্যাপী সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উচ্চমূল্যে সার কিনতে পারবে না কৃষকরা। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতি বছরই খাদ্যশষ্য নষ্ট হয় আমাদের। এছাড়া সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও বলা হচ্ছে, খাদ্য সংকট হবে। দিন দিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, অধিক দামে খাবারও কিনতে পারবে না বাংলাদেশ। তাই দুর্ভিক্ষ ঠেকাতেও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই সুশাসন এবং সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। সংসার চালাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। তাই যারা সরকারি ও বেসরকারি চাকরি করে তাদের কমপক্ষে ৩০% মহার্ঘভাতা দিতে হবে। আর মধ্যবিত্ত, নি¤œমধ্যবিত্ত ও অসহায় মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে রেশনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, দিন দিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। আবার আগামী বছর থেকে সুদ ও আসল সহ ২২ বিলিয়ন ডলার শোধ করতে হবে। তখন মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে দেশ। যখন মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যায় করা হচ্ছে, তখন শুধু সুইস ব্যাংকেই পাচার হয়েছে ৪ লাখ কোটি টাকা। মেগা প্রকল্পের নামে একটি শ্রেণীর দেশে টাকা রাখার জায়গা নেই। তারা বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। আর বেশির ভাগ মানুষই খাবার কিনতে পারে না, অর্থের অভাবে শিশুর চিকিৎসা হচ্ছে না। দেশের মানুষের কষ্ট যেনো কেউ বোঝে না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি দূর্বল হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই দেশের রিজার্ভ কমে গেছে। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতিতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবদানের কথা উল্লেখ করে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, উপনিবেশিক ব্যবস্থা ভেঙে সাধারণ মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতেই উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তণ করেছেন। উপজেলা পর্যায়ে ১৮টি দপ্তরে বিসিএস কর্মকর্তা নিয়োগ করে মানুষের চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষি, পশুপালন, মৎস্য চাষে বৈপ্লবিক উন্নতি সাধারণ করেছিলেন। শহরের সেবা গ্রামীণ মানুষের দুয়ারে পৌছে দিয়েছিলেন পল্লীবন্ধু। উপজেলা পর্যায়ে মুন্সেফ কোর্ট ও বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপন করে আইনী সেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করেছেন পল্লীবন্ধু।
তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা মূলক একটি শাসন সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু এখন উপজেলা পরিষদে জীবন নেই, উপজেলা পরিষদ যেন লাশ হয়ে আছে। এখন উপজেলা পরিষদ আমলা নির্ভর হয়ে পড়েছে। সেবার পরিবর্তে শোষণ চলছে উপজেলা পরিষদের নামে। আমরা পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের প্রকৃত উপজেলা পরিষদ দেখতে চাই।
এসময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর অব. রানা সোহেল এমপি, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, আতিকুর রহমান আতিক, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব বেলাল হোসেন, জাতীয় ওলামা পার্টির আহবায়ক ড. ইরফান বীন তোরাব আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ সভাপতি এম এ সোবহান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, নাজনীন সুলতানা, ড. নুরুল আজহার শামীম, মাসরুর মওলা, গোলাম মোস্তফা, হারুন অর রশীদ, ইঞ্জিঃ মনির আহমেদ, মাহবুবুর রহমান লিপটন, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, মেজর অব. আব্দুস সালাম, সালমা হোসেন, আহসান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম রাজু, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন সরকার, হেলাল উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজার রহমান, আনোয়ার হোসেন তোতা, এনাম জয়নাল আবেদীন, হুমায়ুন খান, ওলিউল্লাহ চৌধুরী মাসুদ, মাখন সরকার, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুলতান মাহমুদ, এম এ রাজ্জাক খান, মাসুদুর রহমান মাসুদ, জহিরুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখ।