নিউজ ডেক্সঃ
দুজনই একই বিভাগের শিক্ষার্থী। ছেলেটি সিনিয়র, মেয়েটি জুনিয়র। একই বিভাগে পড়ার সুবাদে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রোববার (১০ এপ্রিল) দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এরই জের ধরে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন ওই ছাত্রী।
রোববার রাতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পার্শ্ববর্তী একটি মেসে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১১ এপ্রিল) ঘটনাটি জানাজানি হয়।
ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত। তিনি ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী একটি মেসে থাকেন।
আত্মহত্যাচেষ্টার জন্য প্রেমিককে দায়ী করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি। সোমবার বিভাগের সভাপতি রবিউল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিভাগ ও ওই ছাত্রীর সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, আত্মহত্যার চেষ্টা করা ওই ছাত্রী পড়াশোনায় এক বছর ড্রপ দিয়েছেন। বিভাগেরই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। রোবার সকালে তাদের সাক্ষাতও হয়। এসময় ওই ছাত্র তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললেও ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেননি। ফলে সন্ধ্যায় অভিমানে ওই ছাত্রী মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। একইসঙ্গে তার মৃত্যুর জন্য প্রেমিককে দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার জীবনের শেষ রোজা আজ। শেষ সকাল ছিল আজকের সকাল। নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি। অনেক বেশি ক্লান্ত এখন। হয়তো জীবন আমার বোঝা আর আমিও জীবনের জন্য বোঝা হয়ে গেছি। আমার জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে সেই মানুষটা যাকে আমি আমার অক্সিজেন বলতাম। আসলেই সে আমার অক্সিজেন। সেই আমার প্রাণ কেড়ে নিলো। আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র সে দায়ী।’
স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ওই ছাত্রীর মেসে থাকা অন্য সহপাঠীরা বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসরা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সেখানে পাকস্থলী ওয়াশ করার পর ছাত্রীর জ্ঞান ফেরে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, আনুমানিক রাত ৮টার দিকে ওই ছাত্রীকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। তিনি মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিভাগের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। কিছুটা কাউন্সিলিংয়ের চেষ্টাও করেছি। ওর বাবা করোনার ছুটিতে মারা যায়। এ নিয়ে সে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। আপাতত তাকে বাড়িতে তার মায়ের কাছে পাঠানো হবে।’