নিউজ ডেক্সঃ
রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের চর টাংরির বাজার সংলগ্ন নদীর পাশে কয়েকটি পয়েন্টে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও ভূমি আইন বিরোধী কাজ করে যাচ্ছে একটি চক্র।গায়ের জোড়ে রাতে ৮ টা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু করে ভোর পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে চিহ্নিত ঐ মহলটি।
পাশেই হারাগাছ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়েও তাদের দৌরাত্ন থামাতে পারছে না। তাই স্থানীয়
জনগণের মুখে মুখে প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনের বিপক্ষে ওরা কারা? ওদের খুঁটির জোড় কোথায়? প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে এমন শক্তি
কোথায় পেলো?
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,হারাগাছ ইউনিয়নের টাংরির বাজারে কিছু মানুষ বালু উত্তোলন করছে সেখানে তাদের অনুমতি আছে কি নেই আর তারা ঐ সকল জমির প্রকৃত মালিক কি না এমন প্রশ্ন করা হলে এক বালু ব্যবসায়ী বলেন,
তাতে আপনার কি?
অনেক সাংবাদিক এখানে এসেছিল। দুইশ করে টাকা নিয়ে চলে গেছে।আপনি কোন সাংবাদিক ?
আমি ছোট সাংবাদিক।
ছবি তুলছেন কেন?
লাগবে। এরকম অনেক ছোট ছোট বাক যুদ্ধ হওয়ার পর এক প্রতিনিধির মোটরসাইকেল চালকের হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন, রাখেন ভাই। আপনার মতো কোন সাংবাদিক এতো প্রশ্ন করে নাই। রিপোর্ট করিয়েন না। এই সাংবাদিক সম্মানের সাথে টাকা ফেরত দিয়ে চলে এসেছেন। হারাগাছ চরে মানাস নদী ও তিস্তা নদীর পাশে কয়েকটি পয়েন্টে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগীতা চলছে। প্রতিদিন শত শত মাহিন্দ্র ট্রাক্টর করে তা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,এভাবে উপর্যুপরী খনন করা হলে কিছুদিনের মধ্যে মানাস নদীটি দেবে যাবে। আমরা শুনেছি সেখানে
কাউনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম মায়া তার নিজস্ব জমি খনন করাচ্ছে কিন্তু জমিগুলো সরকারি না জমির মালিক তিনি তা আমরা জানি না তারা প্রভাবশালী তাই তাদের কেউ বাধা দিতে পারে না কাউনিয়া উপজেলার ভুমি কর্মকর্তা ওদের ভয়ে সেখানে যেতে পারেন না। ওদের দমাতে হলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেডের অভিযান লাগবে।
বালু মহল আইন এ বলা আছে
সরকারের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫-এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা
আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদন্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়
দন্ডে দন্ডিত হবেন। বলা বাহুল্য, এসব আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। আর আইন ভঙ্গকারী যদি প্রভাবশালী হন, তাহলে তো আইন প্রয়োগের কোনো প্রশ্নই নেই।
টাংরির বাজারের একজন ব্যাবসায়ি বলেন,প্রতিদিন সন্ধা হলে প্রায় এই রাস্তাদিয়ে বালু ভর্তি ট্রাক্টর আর ট্রাক বাইরে পাঠান হয় যার ফলে রাস্তা গুলো দেবে যাচ্ছে আর সাধারণ মানুষের চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে দ্রুত এইসব বন্ধ করা উচিত।
এই বিষয়ে হারাগাছ পৌরসভার মেয়র এরশাদুল হক বলেন, চরে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়েছি অনেক আগেই পেয়েছি। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই।যা করার প্রশাসন কে করতে হবে কিন্তু এভাবে তারা বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন রাতে আমার পৌরসভার রাস্তাদিয়ে অবৈধ ট্রাক্টরে করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠায় ফলে আমার পৌরসভার রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং রাস্তায় দূর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।
এই বিষয়ে হারাগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যন রাজু আহাম্মেদ কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কিছু বলতে রাজি হয়নি।
কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুমুর রহমান বলেন, টাংরির বাজারে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন এর বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা চেষ্ঠা করা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।দ্রুত সেখানে অভিযান চালানো হবে।
কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনান আনারুল ইসলাম মায়া বলেন,আমার নিজস্ব জমিতে আমি বালু উত্তলন করি এখানে কারো কিছু করার নেই এর আশেপাশে অনেক অবৈধ কাজ হয় আপনারা সেগুলোর নিউজ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা তারিন বলেন,আমাদের কাছে অবৈধ বালু উত্তোলন এর কোন অভিযোগ আসে নই যদি আসে সেখানে দ্রুত সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।