নিউজ ডেক্সঃ
নড়াইলের লোহাগড়ায় ছাগল চুরির অপবাদে দুই ভাইকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। এক ভাইয়ের হাতে দড়ি এবং আরেক ভাইয়ের হাতে গামছা বেঁধে বেধড়ক মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (১৫ মে) সকালে লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে ছাগল ফিরে আসার খবরে বন্ধ হয় নির্যাতন।
নির্যাতিত দুই ভাই হলেন- ওই গ্রামের রশিদ শেখের ছেলে ফরিদ শেখ (৩০) ও একই গ্রামের রউফ শেখের ছেলে তরিক শেখ (২৩)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। বর্তমানে তারা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় একটি দোকানের সামনে ছাগল চুরির অপবাদে লুঙ্গি ও নীল গেঞ্জি পরিহিত এক ব্যক্তি খালি গায়ে থাকা একজনকে হাতে দড়ি বাঁধা অবস্থায় লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। এ সময় আরও কয়েকজনকে মারধরে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।
এদিকে এর পাশে কমলা গেঞ্জি পরিহিত আরেকজনকে হাতে গামছা বেঁধে একজন ধরে রেখেছেন। নীল গেঞ্জি পরিহিত ওই ব্যক্তি তাকেও মারতে থাকেন। পরে আরও কয়েকজন যোগ দেন।
মারধরের সময় দুজনই ছাগল চুরির বিষয়ে জানেন না বলে জানান এবং মারধর না করতে আকুতি জানা। এরপরও মারতে থাকেন। একই সঙ্গে পাশ থেকে কয়েকজন আর গাঁজা সেবন করবে কিনা জিজ্ঞেস করেন। প্রতি উত্তরে দুজনই গাঁজা সেবন করবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও মারধরের শিকার দুই ভাই জানান, শনিবার (১৪ মে) রাতে মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাই মুন্সির একটি ছাগল হারিয়ে যায়। ওই ছাগল চুরির অভিযোগে ফরিদ ও তরিককে রোববার (১৫ মে) সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে আনা হয়। পরে নান্নু শেখের দোকানের পাশে একজনকে দড়ি দিয়ে আরেকজনকে গামছা দিয়ে বাঁধেন। এ সময় নান্নু শেখ, আজমল মুন্সি, ইজাজুল মুন্সি ও রমজান মুন্সিসহ চার-পাঁচজন দুজনকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিড়ির ছ্যাঁকও দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে কোটাকোল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু কালাম মুন্সিও উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলা ওই নির্যাতনের মধ্যে নান্নু মুন্সির বাড়ি থেকে খবর আসে ছাগল বাড়ি ফিরে এসেছে। তখন ফরিদ ও তরিককে ছেড়ে দিয়ে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
জানতে চাইলে কোটাকোল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু কালাম মুন্সি মারধরের বিষয় স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। তবে আমি তাদের মারিনি। সন্দেহ থেকে তাদের মারা হয়েছে।’
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন বলেন, আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। দুজনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।