নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার ৭ নং মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কিছুদিন আগে আর সেই নির্বাচনে বিজয়ি হয়েছিলেন সতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জিল্লুর রহমান।মর্ণেয়া ইউনিয়ন হচ্ছে রংপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র প্রবণ এলাকা সেখানকার ৮৫ শতাংস মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে।দরিদ্র প্রবণ এলাকা হওয়ায় মানুষের আশা ভরসা বহুগুন বেড়ে গিয়েছিলো নতুন চেয়ারম্যানের উপর কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই পুরো ইউনিয়ন কে দূর্নীতির রাজ্যে পরিণত করেছেন চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান।তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করা, সরকারি জমিতে অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি,আবাসন প্রকল্পে ব্যাপক টাকা নিয়ে মুজীব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর উপহার বিতরন সহ ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়নের সরকারি রাস্তার
প্রায় সাড়ে তিন শতাধীক গাছ কেটে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বিক্রি করে আত্বসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ইউনিয়নে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ইউনিয়নের বেলাত মিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।অভি্যোগ পেয়ে তিনি জেলা প্রশাসক, জেলা দূর্নীতি দমন কমিশন, এডিসি রিভিনিউ,উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগের অনুলিপি
ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রেরন করেছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, মর্নেয়া ইউনিয়নের তালপট্টি হতে কদতলী
যাওয়া সরকারি রাস্তার দু-ধারে ২০০৫ সালে প্রায় সাড়ে তিন শতাধীক ইউক্যালেক্টর গাছ
রোপন করেন ওই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সামসুল আলম। দীর্ঘ ১৬ বছরে গাছগুলো
বেশ বড় হয়ে উঠে। মর্নেয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান তার কাছের লোক হিসেবে পরিচিত মাহমুদুল, রিয়াজুলসহ কয়েকজনকে দায়িত্ব দিয়ে সম্প্রতি উক্ত গাছগুলো নিয়ম বর্হিভূতভাবে কেটে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বিক্রি করে আত্বসাৎ করেন। এ
ঘটনায় ইউনিয়নে মানুষের মাঝে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা বেলাত মিয়া গত ৫ মে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানসহ মাহমুদুল ও রিয়াজুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সহকারী
কমিশনার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত তহশিলদারকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন
দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে তহশিলদার নারায়ন চন্দ্র মহন্ত জানান, আমি তদন্ত করে
চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানসহ মাহমুদুল ও রিয়াজুলের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার ৩ শত ১১ টি ইউক্যালেক্টর গাছ অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করার প্রমান পাওয়ার প্রতিবেদন দিয়েছি।
এদিকে সরজমিনে গেলে ওই রাস্তার দু-ধারে করাত দিয়ে কাটা গাছের গোড়া দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় আনেজা, সাত্তার, রাব্বি, মোসাদ্দেকসহ অনেকের গাছ কাটার বিষয় জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, গাছ কাটার লোকজনকে আমরা গাছ কেন কাটতেছেন বলে জানতে চাইলে তারা আমাদের বলেন চেয়ারম্যান জিল্লুরের নির্দেশে কাটা হচ্ছে। তারা আরো জানান, পাশের হারাগাছ পৌরসভার এলাকার ছ’মিলে নিয়ে গেছে গাছ। সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল আলম জানান, ওই রাস্তাটি বন্যায় নষ্ট হয়ে গেলে আমি রাস্তাটি পুনরায় সংস্কার করে টেকসইয়ের লক্ষে রাস্তার দু-ধারে প্রায় ১ হাজার ইউক্যালেক্টর গাছের চারা ২০০৫ রোপন করি।
মুজীব বর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার আবাসন প্রকল্পের ঘর বিতরনেয় ব্যাপক দূর্নীতির সাথে জড়িত মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান তিনি একেক জনের কাজে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার করে টাকা নিয়ে সে সকল ঘর বিতরন করেছেন যাদের থাকার জন্য নিজস্ব বাড়ি যাতায়াত এর জন্য মোটরসাংকেল এবং চাষাবাদের জন্য আবাদী জমি রয়েছে তারাও আবাসন প্রকল্পের ঘর নিয়েছেন অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে।সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যাদের বাসায় দামী আসবাব পত্র রয়েছে তারাও আবাসন প্রকল্পে বসবাস করছেন কিন্তু যাদের এসকল ঘর পাওয়ার কথা ছিলো তারা ঘরের মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে ইউনিয়নের ভাংগা গড়া বাজারের একজন নাপিত বলেন আমি আবাসন প্রকল্পের জন্য চেয়ারম্যান কে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু আরেক জন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে সেই ঘর নিয়েছেন বিশ হাজার টাকা দেই নাই বলে আমাকে ঘর দেয় নি চেয়ারম্যান সাহেব।
তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে ,তিনি সরকারি জমিতে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন নিজস্ব ক্ষমতাবলে এলাকার আলমার বাজারের উচ্চগ্রামে অবৈধভাবে ট্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।সরজমিনে সেখানে গেলে মেশিন পাওয়া না গেলেও সেখানে যে বালু উত্তোলন করা হয় তার হদিস পাওয়া যায়।কিন্তু বর্তমানে তোপের মুখে তিনি বালু উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন বলে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে।
বালু মহল আইন এ বলা আছে
সরকারের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫-এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা
আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদন্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়
দন্ডে দন্ডিত হবেন। বলা বাহুল্য, এসব আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। আর আইন ভঙ্গকারী যদি প্রভাবশালী হন, তাহলে তো আইন প্রয়োগের কোনো প্রশ্নই নেই।
তাই স্থানীয়
জনগণের মুখে মুখে প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনের বিপক্ষে গিয়ে চেয়ারম্যান কিভাবে এ সকল কাজ করছে ? তার খুঁটির জোড় কোথায়? প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে এমন শক্তি
কোথায় পেলেন তিনি?তাই মর্নেয়া ইউনিয়ন বাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কয়েকজন এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্নভাবে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নিতি করে আসছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাংগাগড়া বাজারের একজন জানান আল্লাহ ক্ষমতা দেচে চেয়ারম্যান অবৈধ কাম করবার লাগছে তাতে জনগনের কি ওমার সাথে কি হামরা পামো ভোট আসলে ওমরা হামাক খুজি বেরাইবে ভোট শেষ ওমার দেখা ও শেষ।
আলমার বাজারের বাসিন্দা সেকেন্দার আলী জানান,চেয়ারম্যান তার নিজস্ব ক্ষমতা বলে ইউনিয়ন কে দূর্নিতির আক্ষরায় পরিণত করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানান প্রশাসনের কাছে তিনি।
খলিফার বাজারের বাসিন্দা রুহুল মিয়া জানান,চেয়ারম্যান সাহেব গাছ কেটে বিক্রি করেছে সেটা সবাই দেখেছে তিনি বালু উত্তোলন করছেন প্রকাশে,আবাসন প্রকল্পে ওপেনে অর্থ লেনদেন করেছে তার বিরুদ্ধে নিউজ করে কি হবে আপনারা তো আর তাকে নামাতে পারবেন না।তার দূর্নিতির খবর এর আগেও প্রকাশ পেয়েছে কিন্তু তিনি তো থামছেন না উল্টো আরো দিন যাচ্ছে তার দূর্নিতির পরিমান বাড়ছে।
এ সকল বিষয়ে মর্নেয়া ইউনিউনের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আসুক আমি ৫৬ মাস চেয়ারে থাকবো।তার পর থেকে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকের ফোন রিসিভ না করে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
তাই এলাকার সচেতন মহলের প্রশাসনের কাছে দাবী করেন দূর্নিতির অভি্যোগ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহনের।